প্রবন্ধ

মধ্যরাতের ঢাকা

Feb 27, 2013

নিউ এলিফান্ট রোড তখন ফাকা,নিস্তব্ধ ।কার্তিকের শীতল বাতাস হু হু করে বইছে। আমি হাঁটছি । সন্ধ্যা পেরিয়ে তখন মাঝ রাত আসন্ন । হলদে চাদ আকাশে মৃদু হেসে ভেসে যাচ্ছে দূর দিগন্তে । এই ইট কাঠের ঢাকা নগরীতে উচু উচু দালান কোঠার মাঝে চাঁদ কে খুজে পাওয়া বরই কঠিন । তাই চাঁদ মামার সাথে মানুষ সহজেই লুকচুরি খেলতে পারে মানুষ ।মানুষ নিজেকে আরাল করতে খুজে নেই নিজ ঘরের জানালার দেয়াল,আর চাঁদ মামা কখনো উচু উচু দালানের মাঝে অথবা কাল মেঘের মাঝে নিজেকে লুকায় । পিতৃ-মাতৃ হিন নিরব এই পথঘাট,রাতের আকাশের নিঃসঙ্গ চাদ ,কমলতা মাখা স্নিগ্ধ বাতাস,ভালবাসা মাখা নিঃসঙ্গতা আমার বড়ই আপন । তারা আমার বন্ধু । সেই ছোট বেলা থেকে হামাগুরি  দিয়ে চলার বয়স থেকেই তাদের সাথে আমার বন্ধুত্ব । আমার বয়স বেড়েছে,ছোট একটা মফস্বল থেকে এসেছি এই ঢাকা নগরীর মাঝে। তবুও আমার বন্ধুত্ব কমেনি বরং  তাদের নিয়েছি এই বুকের মাঝে । এই বন্ধুত্তে নেই কোন ছল-চাতুরতা,নেই কিছু দেনা পাওনার তাড়না ।এই শহরের মানুষ গুলো বড় অদ্ভুত ।বড় অদ্ভুত তাদের জীবন । তাই নগরের নাগতিকতা সাথে চলতে না পারা বৃদ্ধ মানুষ গুলোর জায়গা হয় না এত উচু উচু দালানের কোন খুপড়িতে ।তাইতো তাদের থাকতে হই বিদ্ধাস্রমে ।যেই ছেলেদের কলে পিঠে মানুষ করেছে তারাদেরই কাছে হয়ে পড়ে বোঝা । আমার মত দিক হিন মানুষের মত আরেক দল মানুষ আছে এই শহরে । শহর তাদের ডাকে নিশি কন্যা । সমাজ পতিদের ভোগবিলাশের পণ্য হয়েও তারা নিকৃষ্ট । এই মানুষ গুলো বোঝা আসলেই বড় দাই,পত্নি প্রেমে এই মানুষই বানাই তাজমহল । আবার সেই হত্যা করে হাজারও শ্রমিক । পত্নীকে স্মরণীয় রাখতে তাজমহল গড়ে উঠে হাজারো শ্রমিকের কষ্টের আর্তনাদে । তবে কি এই শ্রমিকের জিবনের ভালবাসা প্রেম নেই,মূল্য নেই তাদের ভালবাসার মানুষের চোখের জলের । একটি ভালোবাসাকে অমর রাখতে যেখানে কাঁদতে হয়েছে হাজারও ভালবাসা কে সেখানে মাথা তুলে দাড়িয়ে থাকা এই তাজমহল কি উপহাস নয়। ঐ গরিব শ্রমিকের যাদের জটেনা ২ বেলা খাবার তাদের ভালবাসার উপহাস,বড় অদ্ভুত পৃথিবীর অদ্ভুত মানুষ আমরা । আলো ধেয়ে আসছে ,কাক গুলো ডাকতে আরম্ভ করেছে,এবার আমার বাড়ি ফেরার পালা।ঘুমন্ত শহর এখন জাগবে,ছুটবে মিথ্যে পথে,অপমৃত্যুর পথে ।

Powered by Froala Editor